দেশের সবাইকে মিতব্যয়ী হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন ‘দেশবাসীকে অনুরোধ করবো সবাই যদি একটু সাশ্রয়ী ও মিতব্যয়ী হয় এবং সব ব্যবহারে সবাই যেন একটু সতর্ক হয় তাহলে খুব সমস্যা হওয়ার কথা না। দ্রব্যমূল্যের দাম যে বেড়েছে, এটা যে আন্তর্জাতিক পরিস্থিতির কারণে এই কথাটা দেশবাসীর সামনে তুলে ধরতে হবে।’
মঙ্গলবার (১৭ মে) জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদ (এনইসি) সভার (ভার্চ্যুয়াল) সূচনা বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। রাজধানীর শেরে বাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত এ সভায় গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে সংযুক্ত হন তিনি। তিনি বলেন, বৈশ্বিক মন্দার মধ্যেও সরকার বাংলাদেশে দ্রব্যমূল্য অনেকটা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সক্ষম হয়েছে। এখানে অনেকেই সমালোচনা করেন। তারপরেও বলবো আওয়ামী লীগ সরকার আছে বলে দ্রব্যমূল্য কিছু নিয়ন্ত্রণ করতে পারছি। এখন যদি অন্য কেউ থাকতো তাহলে দেশের যে কী অবস্থা হতো, এমন কী রাস্তায় রাস্তায় মারামারি শুরু হয়ে যেত। কাজেই সেটা হয়নি। আমরা সেই জায়গা থেকে দেশকে মুক্ত রাখতে পেরেছি।
এসময় বৈশ্বিক সংকটের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, করোনা, ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ এটা আমাদের অর্থনীতির ওপর বিরাট প্রভাব ফেলেছে। শুধু আমরা না উন্নত, অনুন্নত দেশেই সমস্যা। দ্রব্যমূল্যের চাপ এখন ইউরোপে। এখন এমন দেশ আছে যেখানে ১৭/৫০ পারসেন্ট পর্যন্ত দ্রব্যমূল্য বেড়েছে। তিনি বলেন, জার্মানির মতো জায়গায় তেলের অভাব, একমাত্র অলিভ অয়েল ছাড়া কিছুই পাওয়া যাচ্ছে না। ইংল্যান্ডের মতো জায়গায় সেখানে তেল নির্দিষ্ট করে দেওয়া, এক লিটারের বেশি কেউ নিতে পারবে না। আমেরিকায় ইনফ্লেশন আট ভাগের ওপর উঠে গেছে, ১০ ভাগে পৌঁছে যাবে। এক ডলারের ডিজেল-পেট্রোল এখন চার ডলারের ওপর উঠে গেছে। সেখানেও এখন মানুষ একবেলা খেতেই কষ্ট। সারা বিশ্বব্যাপীই কিন্তু এই অবস্থা বিরাজমান। তারপরও আমরা আমাদের অর্থনীতির চাকা সচল রাখতে পেরেছি।
বৈশ্বিক এ মন্দার সময় বেছে বেছে প্রকল্প নেওয়া হবে জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, আমরা এই প্রতিকূল অবস্থার মধ্যেও বাজেট দিতে যাচ্ছি। ভালোই বাজেট মোটামুটি আমরা মনে করি। প্রকল্প নেওয়া ও বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার ঠিক করতে হবে। কোনটা আমার এক্ষুণি প্রয়োজন, সেগুলো আমরা করব। আর যেগুলো এক্ষুণি প্রয়োজন নেই সেগুলো একটু ধীরগতিতে করব। যেন আমাদের অর্থনীতির ওপর চাপটা না আসে।